"আল্লাহর উপর বিশ্বাস" এবং "ঈশ্বর উপর বিশ্বাস"
আল্লাহর উপর বিশ্বাস
আল্লাহর উপর বিশ্বাস :
অনেকের জন্য আল্লাহ তাআলা অনেক কিছু সহজ করে দেন। কারো জন্য টাকাকড়ি সহজ করে দেন আবার কারো জন্য আত্মবিশ্বাস সহজ করে দেন। আপনি আমি যে কাজে নার্ভাস হয়ে যাই সে কাজটাই আরেকজনের জন্য কোনো ব্যাপারই না। কারও জন্য আরবি শিখা সহজ করে দেন আবার কারও অবস্থা এরকম যে সে আরবি শিখার জন্য জন্মায়নি। সে হয়ত তার নিজ ক্ষেত্রে অত্যন্ত দক্ষ, সে পদার্থবিজ্ঞানে ডক্টরেট করতে পারে কিন্তু আববি শিখা তার দ্বারা সম্ভব নয়। প্রত্যেক মানুষ সমান নয়। সাধারণত যা ঘটে তা হল আমরা সাফল্যে অভ্যস্ত হয়ে যাই। আল্লাহ তাআলা আমাদের জন্য একটি কাজ সহজ করেন, পরবর্তী কাজটিও সহজ করেন, তার পরবর্তী্ে কাজটিও সহজ করে দেন। কিন্তু সবকিছুই কি আমাদেরর জন্য সহজ, না একটা সময় আমরা ব্যর্থ হতে পারি।
ধরুন, একজন ছাত্র প্রথমবার ১০০ পেল, দ্বিতীয়বারও ১০০, তৃতীয় ও চতুর্থববারও তাই। ৫ম বারে সে পেল ৫০। যেহেতু সে ১০০ পেয়ে অভ্যস্ত তাই তখন সে বলে যে, আমার জীবন অর্থহীন, আল্লাহ তায়ালা আমার সাথে নেই। লক্ষণীয় বিষয় এই যে সে উচুতে উঠে অভ্যস্ত। একটিমাত্র ছোট্ট ব্যর্থতা তাকে বিধ্বস্ত করে দিয়েছে। সে এখন পুরোপুরি হতাশাগ্রস্ত। এরকম অভিজ্ঞতা আমাদের প্রায়ই হয়। কিন্তু এটা তখনই ঘটে যখন আমরা ভুলে যাই যে আমাদের প্রত্যেক সফলতা ছিল দূটি জিনিসের সমন্বয়- আমাদের প্রচেষ্টা ও আল্লাহ তাআলার সহায়তা। প্রত্যেকবার যখন আমরা সফল হই তার কারণ এই নয় যে, সেটা সহজ। বরং আমরা চেষ্টা করেছিলাম এবং আল্লাহ বরকত দান করেছিলেন। এখন কোনো কাজে যদি আমরা ব্যর্থ হই সেক্ষেত্রে কারণ হতে পারে দুটি। প্রথমত, আমরা যথেষ্ট প্রচেষ্টা দেইনি এবং যখন আমরা এটা করব আল্লাহ তাআলা এতে বরকত দিবেন না। দ্বিতীয়ত, আমরা হয়ত চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু আল্লাহ এতে বরকত দেননি কারণ তিনি এটাই আমাদের জন্য ভাল মনোনীত করেছেন।
চলুন একটি বাস্তব উদাহরণ দেখি – আমার একজন খুব ভাল হিন্দু বন্ধু ছিল এবং তার ইচ্ছা ছিল সে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হবে। সে ছিল সরাসরি A গ্রেডের ছাত্র। SAT তে সে সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়েছিল। মেডিকেল কলেজে আবেদন করে সে ফুল স্কলারশিপ আশা করছিল। কিন্তু সে রিজেক্টেড হলো। সে তখন পুরোপুরিভাবে বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছিল। যাই হোক, সে অন্য এক বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্সে ভর্তি হল। সেখানে সে মুসলিম বন্ধুদের সাথে মিশল এবং দুই বছরের মধ্যে সে ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিল। এখন সে পিছনে ফিরে তাকায় এবং বলে, “আল্লাহ তোমাকে অশেষ ধন্যবাদ যে, আমি মেডিকেল কলেজে চান্স পাইনি কারণ আমি তখন মনে করেছিলাম আমার জীবনের সবচেয়ে খারাপ ঘটনাটি ঘটেছে। কিন্তু এখন আমি বুঝতে পারছি সেটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে কল্যাণকর ঘটনা। ” অর্থাৎ আমাদের জীবনে যাই ঘটে সবকিছু আমাদের কল্যাণের জন্যই ঘটে। তাই যেকোনো কাজ শুরুর পূর্বে পজিটিভ অ্যাটিচিউড নিয়ে শুরু করতে হবে এই বলে যে, “আল্লাহ তাআলার সহায়তায় আমি এ কাজ করতে পারব। ” তারপরও যদি সফল না হন তাহলে বলা উচিত, “আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ তাআলা এটা আমার কল্যাণের জন্যই করেছেন।”
এতকিছুর পরও যদি হতাশা আসে তাহলে আপনার জন্য ড. আবু আমিনাহ বিলাল ফিলিপস এর একটি উক্তি রেখে দিলাম- “আপনার যে জীবনটাকে আপনি ঘৃণা করছেন, অনেকেই সেটার স্বপ্ন দেখছে।” উপরের দুটো লাইন নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করতে থাকুন।
nice
ReplyDelete